সবজির দামে হতাশ কৃষক
ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জে সবজি এখন গলার কাটা
স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় :
২১-০১-২০২৫ ০৪:০৯:৫৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২১-০১-২০২৫ ০৪:৪২:৪৭ অপরাহ্ন
সংবাদচিত্র : সংগৃহীত
ঢাকার পাশে কেরানীগঞ্জে সবজি এখন গলার কাটা। কদিন আগেও প্রতি পিস ফুলকপি, বাঁধাকপি বিক্রি হতো ৩০/৪০ টাকা। সে কপি এখন বিক্রি হচ্ছে ৫/৭ টাকায়। প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ২ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫ টাকা। একইভাবে সিমের কেজি ১০ টাকা, শাকের আটি ২ থেকে ৫ টাকা।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কষ্টে রোপণ করা শাকসবজি বিক্রি করতে না পেরে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে অনেক কৃষকের। কেউ নতুন করে আবাদ করতে শাক-সবজি তুলে ফেলে দিচ্ছেন, কেউবা নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করে পরিস্কার করছেন জমি। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, কৃষিতে আগ্রহ হারাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ সার বীজের উর্ধ্বগতি এবং বাজারের সঠিক তদারকি না থাকার কারণেই কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
হযরতপুর গ্রামের কৃষক আহসান বলেন, “খুচরা বাজারে মুলার কেজি ৩০ টাকা, ফুলকপির পিস ৩০/৪০ টাকা, সিমের কেজি ৪০ টাকা, শাকের আটি সর্বনিম্ন ১০/২০ টাকা অথচ আমরা এসব বিক্রি করতে পারছি না। প্রতি মণ মুলা তোলা এবং পরিবহন খরচ ১০০ টাকার উপর অথচ বিক্রি হয় ১৫০ টাকায়। আবার অনেক সময় বিক্রিও হয় না। ফুল কপি ৫ টাকা পিস, কপি বিক্রি করে পরিবহন খরচও হয় না, তাই এসব বাজারে না নিয়ে ফেলে দিচ্ছি।”সিম চাষি জামিলা খাতুন বলেন, “প্রতিবছর সিম বিক্রি করে গরু কিনি, সংসার চালাই, টাকা ব্যাংকেও রাখি কিন্তু এবার ২ লাখ টাকা খরচাও উঠবে না। এতো সুন্দর সিম বিক্রি করতে গেলে ১০ টাকার বেশি বিক্রি করা যায় না। অথচ এক কেজি সিম উঠাতেই ১০ টাকা খরচ।”
কলাতিয়ার কৃষক রুহুল মিয়া বলেন, “বাঁধাকপি কয়েক সপ্তাহ রাখা গেলেও ফুলকপি বিক্রির উপযোগী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রি করতে হয়। না হলে ফুল ফুটে গেলে বিক্রির অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আমার এক বিঘা জমির ফুলকপির বিক্রি করতে না পারায় জমিতে নষ্ট হচ্ছে।”
কৃষক নুরু বলেন, “সবজির দামে ক্রেতা খুশি হলেও আমরা খরচের টাকা তুলতে না পেরে পথে বসতে চলেছি। আমরা যারা ফসল ফলাই, তারা সব সময়ই কম দাম পাই। এখন বাজারে সবজি বিক্রি করে পরিবহন ও শ্রমিক খরচের টাকাও উঠছে না। ক্রেতা কম থাকায় বেশিরভাগ সবজিই নষ্ট হচ্ছে জমিতে।”
কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহুয়া শারমিন মুনমুন বলেন, “আগাম চাষ করা সবজিতে কৃষকেরা বিপুল অর্থ পেয়েছে কিন্তু বর্তমান সময়ে সবজির ভরপুর মৌসুম হওয়ায় বাজারে সবজিতে পরিপূর্ণ আর মানুষেরও চাহিদা কমেছে, তাই সবজির দাম কম। গত বছর ভালো দাম পেয়ে কৃষক উচ্চমূল্যে বীজ ক্রয় করে অতিরিক্ত ফসল ফলিয়েছে। এ বছর সবজির বাম্পার ফলন হওয়ায় সবজির দাম কমে গেছে। কৃষকরা কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে আবাদ করলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসবে।” কৃষি অফিস কৃষকদের আগাম এবং বিভিন্ন রকমের সবজি আবাদেরও পরামর্শ দিচ্ছে, জানান তিনি।
বাংলা স্কুপ/ প্রতিনিধি/ এনআইএন/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স